ABOUT AUTHOR

Sunday, January 22, 2017

রাজ্জাককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা...

রাজ্জাকরাজ্জাক
নায়ক রাজ্জাকের ৭৬তম জন্মদিন আজ। কিংবদন্তি এই অভিনেতার জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁর সহশিল্পীরা। মজার কিছু স্মৃতিচারণা করেছেন তাঁকে নিয়ে। সেসব নিয়েই এই আয়োজন।

সুচন্দাসুচন্দাসিনেমার সোনালি দিন বললেই মনে পড়ে রাজ্জাকের কথা। তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় জহির রায়হান সাহেবের মাধ্যমে। তাঁর পরিচালনায় বেহুলা ছবিতে আমরা প্রথম একসঙ্গে কাজ করি। তখন থেকেই আমাদের মধ্যে একটি পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অভিনয়শিল্পী হিসেবে রাজ্জাক সাহেব যেমন চমৎকার, তেমনি মানুষ হিসেবেও মিষ্টভাষী। আমার অভিনয়জীবনে যদি ১০০ ছবি করে থাকি, সেগুলোর অর্ধেক রাজ্জাকের সঙ্গে। আজকের দিনে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
কবরীকবরীগল্প ও আড্ডায় আমাদের বন্ধুত্ব। সেটাকে সাধারণ মানুষ বাঁকা চোখে দেখত। কিন্তু চলচ্চিত্রের লোকেরা দারুণ উপভোগ করতেন। তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন, রাজ্জাক-কবরীর বন্ধুত্বের বাইরে আর কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের জুটি তৈরি হয়েছে বাস্তবতার নিরিখে। কত খুনসুটি আর মান-অভিমান যে ছিল আমাদের, তা বলে বোঝানো যাবে না। কখনো এমনও হয়েছে যে মান-অভিমানের দৃশ্যে অভিনয়ের সময় মনেই হতো না যে অভিনয় করছি। রাজ্জাক সাহেবের স্ত্রী লক্ষ্মী আমাদের বন্ধুতা জানতেন। এ নিয়ে তাঁর কোনো মাথাব্যথা ছিল না। তাঁদের সন্তানেরাও আমাদের বাসায় যাতায়াত করত। রাজ্জাক সাহেবকে নিয়ে অনেক মিষ্টি স্মৃতি ও অসংখ্য গল্প আছে আমার। তাঁর জন্মদিনে সেগুলো মনে পড়ে যাচ্ছে।
ফারুকফারুক১৯৬৮ সালের দিকে আমি এফডিসিতে যাই। রাজ্জাক ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম সিনেমা নারায়ণ ঘোষ মিতার এরাও মানুষ। প্রতিযোগিতার পাশাপাশি আমাদের ভেতরে একধরনের ভ্রাতৃত্ব ছিল। কী যে উত্তাল সময় আমরা পার করেছি, তা বলে বোঝানো যাবে না। কার চেয়ে কার ছবি বেশি ব্যবসা করবে, এ নিয়ে আমাদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতা ছিল। তাঁর ছবি মুক্তি পেলে আমি প্রেক্ষাগৃহে লোক পাঠাতাম, ছবিটা কী পরিমাণ দর্শক দেখছেন সেটা বোঝার জন্য। আমাদের পরস্পরের প্রতি যে শ্রদ্ধা, সেটা আমৃত্যু অটুট থাকবে। আর্ট-কালচারের মানুষ হিসেবে আমাদের মধ্যে প্রেম-ভালোবাসা-অভিমান থাকবেই। পাশাপাশি আমরা চিরদিন আপনও থাকব।
মৌসুমীমৌসুমীরাজ্জাক ভাইয়ের মতো গুণী অভিনয়শিল্পীকে মূল্যায়ন করার যোগ্যতা আমার নেই। শুধু শিল্পীই নন, মানুষ হিসেবেও তাঁর অবস্থান অনন্য এক উচ্চতায়। আমরা বয়সে যাঁরা তাঁর ছোট, তাঁদের পথচলার ভুলভ্রান্তিগুলো রাজ্জাক ভাই কখনো মনে রাখেননি। ভুল করলে সঙ্গে সঙ্গে শুধরে দিতেন। পরে দেখা হলে এমনভাবে কথা বলতেন, মনেই হতো না যে তিনি কোনো কষ্ট পুষে রেখেছেন। আমরাও কিন্তু প্রায়ই তাঁকে ও কবরী আপাকে নিয়ে নানা মজা করতাম।
রাজ্জাক ভাইয়ের জন্মদিনে আমাদের প্রত্যাশা, তাঁর মতো বড় মাপের অভিনেতা আমাদের মাথার ওপর ছায়া হয়ে থাকুন আরও অনেক দিন।
গ্রন্থনা: মনজুর কাদের

0 comments:

Post a Comment

Hello